গাজায় গণহত্যায় পন্য বর্জনই যথেষ্ট নয়, বস্তুবাদী ও অধর্ম উগ্রবাদী অপরাজনীতি বর্জন করতে হবে

গাজায় গণহত্যায় পন্য বর্জনই যথেষ্ট নয়, বস্তুবাদী ও অধর্ম উগ্রবাদী অপরাজনীতি বর্জন করতে হবে

আমার মা! আমার বাবা! আমার ভাই! আমার সভ্রম হারা বোন! অঙ্গ-স্বজন-বসতভিটা হারিয়ে রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত দেহ নিয়ে লাশের সামনে কান্না করে! আমরা করবো যখন সেহরির ইফতার থালা ভরে, তখন গাজায় মিসাইলে গণহত্যায় মানুষ মরে! আর আমরা বিশ্ববাসী? তখন দর্শকের গ্যালারিতে দেখছি নিরাপদে!

প্রিয় সত্য ও মানবতার আপন ভাইবোন বন্ধুগণ, আসছে মাহে রমজান চলছে গাজা ফিলিস্তিন গণহত্যার নৃশংস খুনের উৎসব। সেখানকার প্রতিবছর রমজান হয় রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত লাশে মোড়ানো- ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত শিশুর মাতৃহারা আহাজারিতে- আমার সম্ভ্রমহারা বোনের হায়েনার হিংস্রতা থেকে বাঁচার আকুতি আর্তচিৎকারে- সর্বহারা শরনার্থী পিতার চক্ষু বেয়ে রক্তস্নাতে- গুলি বোমার আতঙ্কে এভাবে তো কাটছে বহুকাল ধরেই এবারের তীব্রতা আরও ভয়ানক। কিন্তু কিভাবে মিলবে এই অবস্থা থেকে মুক্তির উপায়?

হ্যা আছে, পাল্টা যুদ্ধ নয়, যুদ্ধেই সমাধান নয় যুদ্ধে শুধু মানবতার রাজনীতির মাধ্যমে মানবতার রাষ্ট্র মানবতার বিশ্ব ব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত কায়েমের অভাবেই জীবন ও মানবতার এমন মহাসংকট বিশ্বের সর্বত্র চলমান।

এ খুন আর কতো? অতীত ইতিহাসে সব ভূল সিদ্ধান্তে চলা, ভ্রান্ত রাজনীতির সমর্থন করে খেলাফত বাদ দিয়ে রাষ্ট্র শক্তি বিশ্ব ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ শক্তি মিথ্যা জুলুম পাশবতা মুলুকিয়তের হাতে তুলে দিয়ে – অপরাজনীতিকে কবুল করায় বিশ্ব মুসলিম ও সকল মানবমন্ডলীর জীবন ভয়ানক হুমকির মুখে।

সব মানুষের কল্যাণের বরাত ফিরিয়ে আনতে আগামী বিশ্বকে মানবতার বিশ্ব গড়ার মহাবিপ্লবে যুক্ত যে হতেই হবে। আমার ঈমান ও মানবতার অবিচ্ছেদ্য অংশ গাজায় মুসলিম ভাইবোনরা এ ভয়াবহ খুনের শিকার দুঃখের সাগরে ভাসমান তাই তাদের উদ্ধার মুক্তির পথ খেলাফতে ইনসানিয়াতকে তো গড়ে তুলতেই হবে।

বড্ড দেরি হয়ে গেছে আমাদের। হারিয়েছি কোটি কোটি নিরপরাধ জীবন। হাতছাড়া হয়ে গেছে রাষ্ট্র বিশ্ব ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ। অখণ্ড দুনিয়া ভেঙে হয়েছে খণ্ডবিখণ্ড বস্তুবাদী জাতীয়তাবাদী বিষাক্ত সংক্রমণে।

মুক্ত জীবনের মুক্ত দুনিয়া অখণ্ড মানবতার অখণ্ড দুনিয়া ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে বস্তুবাদী বিষাক্ত চেতনায় বিচ্ছিন্ন হয়ে একক গোষ্ঠীর একক ভাষাবাদির একক জাতির একক বর্ণবাদির একক ধর্মবাদি একক রাষ্ট্রের মৃত্যুফাঁদ মরণঘাতী বর্ডারের কাটা তারের সৃষ্টি হয়েছে!

অবিভক্ত মানবজাতির মানবিক চেতনা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি মানবিক উপলব্ধি হয়ে গেছে বিলুপ্ত, যার মূল বিষ বস্তুবাদী মতবাদ ও তদ্ভিত্তিক অপরাজনীতি। এছাড়াও এহেন ধ্বংসাত্মক খুন জুলুম মুলুকিয়তের পিছনে রয়েছে একক ধর্মের নামে অধর্ম উগ্রবাদী মোয়াবিয়াবাদি এজিদবাদি খুন জুলুম মুলুকিয়তের অপরাজনীতি।

সকল মানবিক চেতনা উপলব্ধি দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন মানুষজন যতদিন পর্যন্ত না মানবতার রাজনীতির মাধ্যমে মানবতার রাষ্ট্র বিশ্ব ব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত গড়ে তুলতে এগিয়ে আসি ততদিন পর্যন্ত দুনিয়া ব্যাপী এই খুন জুলুম পাশবতা বর্বরতা মুলুকিয়তের অপরাজনীতির ধ্বংসাত্মক তান্ডব চলতেই থাকবে, মুসলিম নিধন হতেই থাকবে। রাষ্ট্র জবরদখল হয়েই থাকবে। সত্য অবরুদ্ধ মানবতা লুন্ঠন ও জীবন বিপন্নতায় নিপীড়নে পতিত হয়েই থাকবে।

তাই বিশ্ব মানবতার মুক্তির ইমাম, জীবন ও জগতের কল্যাণকামী অকৃত্রিম বন্ধু, মানবতার রাজনীতি ও নিরাপদ জীবন ও মানবতার রাষ্ট্র বিশ্ব ব্যবস্থার স্বপ্নদ্রষ্টা রুপকার আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিকনির্দেশনা অনুসরণ খুবই জরুরি যা জীবন ও মানবতার অস্তিত্বের প্রশ্ন নিছক দলীয় বিষয় নয়।

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ ইহুদিদের পণ্য বর্জনে বিন্দুমাত্র কল্যাণ নেই তবে এটাও অমানবতা পাশবতা বর্বরতা মুলুকিয়তের অপরাজনীতির ধ্বংসাত্মক তান্ডবের প্রতি ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ যা শ্রদ্ধা করি।

পন্য বর্জনই যথেষ্ট নয় প্রচলিত অপরাজনীতি ও একক গোষ্ঠীবাদি রাষ্ট্র কাঠামো বর্জন করতে হবে, প্রচলিত বস্তুবাদী মতবাদের জাতীয়তাবাদী অপরাজনীতি ও ধর্মের নামে অধর্ম উগ্রবাদী অপরাজনীতি বর্জন করতে হবে এবং জীবন ও মানবতার মুক্তির রাসুল প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর দেওয়া সব মানুষের কল্যাণের বিশ্ব মুক্তির দিশা খেলাফতে ইনসানিয়াত তথা মানবতার রাজনীতি মানবতার রাষ্ট্র মানবতার দুনিয়া কায়েম করতে হবে।

কিন্তু পুরো রাষ্ট্র পুরো বিশ্ব রাজনীতি যখন আমার পুরো মিল্লাতের বিরুদ্ধে শত শত বছর ধরে বিশ্ব শক্তি তথা সুপার পাওয়ার(Supper power) এবং সুপ্রিম পাওয়ার(Supreme power) দিয়ে আমাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তার মোকাবিলায় বদর-ওহোদ-সিফফিন-কারবালার আলোকধারা খেলাফতে ইনসানিয়াতের আলোকে মানবতার রাজনীতির দিশায় মানবতার রাষ্ট্র বিশ্ব ব্যবস্থায় সব মানুষকে ঐকবদ্ধ সচেতন সোচ্চার করার প্রাণপণ চেষ্টাই করতে হবে অন্যথায় কার্যকর আর কোন হাতিয়ারই নেই এ খুন জুলুম মুলুকিয়তের অপরাজনীতি রুখে দাঁড়ানোর।

নিরাপদ জীবন চাই মানবতার রাষ্ট্র চাই,
সব মানুষ ভাই ভাই মানবতার দুনিয়া চাই,
খুন জুলুম রুখে দিন – জীবন মানবতার পক্ষ নিন,
মজলুম মানবতার আর্তনাদ- ইনসানিয়াত ইনসানিয়াত,
চাইনা দ্বন্দ্ব সংঘাত – চাই শুধু ইনসানিয়াত।
আল্লামা ইমাম হায়াত দিয়েছে ডাক- বিশ্ব মানবতা জাগরে জাগ।
সব উগ্রবাদ নিপাত যাক- জীবন মানবতা মুক্তি পাক।

বিঃদ্রঃ এই লেখাটি বস্তুর উর্ধে মানবসত্তা ও মানবতার রাজনীতির প্রবক্তা আল্লামা ইমাম হায়াত কর্তৃক উপস্থাপিত খেলাফতে ইনসানিয়াতের নীতি অনুসরণে লিখিত।

– মাঈনুদ্দিন টিটু
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন,
বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব।

মন্তব্য করুন